HOW PEOPLE ARE BORN - DO YOU KNOW?

Support independent publishing: Buy this e-book on Lulu.

Tuesday, April 5, 2016

জামিন পেলেন খালেদা জিয়া

DR.MIZAN
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নাশকতার ঘটনায় বিশেষ আইনে করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এ আদেশ দেন। পাশাপাশি অন্য চারটি মামলায়ও পৃথক আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাসে কক্ষে ঢোকেন খালেদা জিয়া। জয়নাল আবেদীনসহ অন্য আইনজীবীরা তাঁর পক্ষে জামিনের শুনানি করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, যাত্রাবাড়ীতে নাশকতার ঘটনায় বিশেষ আইনে করা এ মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশে খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখ করা ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। সবকিছু সুতরাং-অতএবের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ তাঁকে এ মামলার আসামি করেছে। সুতরাং তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হোক।
অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু।
শুনানি শেষে আদালত বেলা ১১টা ২০ মিনিটে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
DR.MIZAN
 ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে গত বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এই অবরোধের মধ্যে ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরী পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা ছোড়া হলে ২৯ জন যাত্রী দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে নূর আলম (৬০) নামের এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ ফেব্রুয়ারি মারা যান। ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে দুটি মামলা করে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ। দুই মামলাতেই খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গত ৩০ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ মামলায় জামিন পেয়ে এরপর খালেদা জিয়া গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পণ করে ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত থকে জামিন নেন। এরপর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে যাত্রাবাড়ী থানায় নাশকতার ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনে করা মামলায়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ও গুলশানে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় জামিন নেন।
DR.MIZAN
 খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী জয়নাল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেন। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বেলা ​১টা ২৩ মিনিটে খালেদা জিয়া আদালত প্রাঙ্গণ ছেড়ে যান।

THANKS A LOT- MEDAM KHALEDA ZIA
 

মৃত্যুর কারণ উল্লেখ নেই, ধর্ষণেরও আলামত মেলেনি

কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ১৪ দিন পর গতকাল সোমবার প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তনুর মৃত্যুর কারণ অজ্ঞাত। ধর্ষণেরও কোনো আলামত মেলেনি। ভিসেরা পরীক্ষায় কোনো প্রকার বিষক্রিয়া বা রাসায়নিকের প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
প্রথম ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা পরীক্ষার প্রতিবেদনের ফলাফল গতকাল গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা। তাহলে তনু কী করে মারা গেলেন—এ প্রশ্নের জবাবে কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
 রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ফলাফল জানিয়ে তনুর বাবা ইয়ার হোসেনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, তিনি গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কোনো কিছু পাওয়া না গেলে আমি কী বলব? আমি তো আর ডাক্তারের ওপরের কোনো ব্যক্তি না। আমার মেয়ের নাকে আঘাত, কানের নিচে আঘাত, মাথা থেঁতলানো—এগুলো কি সব মিছা?’
গত ২১ মার্চ তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের কনিষ্ঠ প্রভাষক। আদালতের নির্দেশে নয় দিন পর ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। আর এই বোর্ডের প্রধান হলেন কামদা প্রসাদ সাহা। এই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো প্রস্তুত হয়নি।

 কামদা প্রসাদ সাহা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। তিনি বলেন, গত রোববার দুপুরের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে প্রথম ময়নাতদন্তের ভিসেরা প্রতিবেদন এসেছে। এরপর গতকাল প্রথম ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে। প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের সময়ে যেসব জিনিস পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর প্রতিবেদন মিলিয়ে নতুন প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

কামদা প্রসাদ সাহা প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন গতকাল মামলাবর্তমান তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছেন।
অবশ্য প্রথম ময়নাতদন্ত নিয়ে শুরুতেই বিতর্ক উঠেছে। তাতে তনুর মাথার পেছনে জখমের কথা গোপন করার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া তাঁর কানের নিচে আঁচড়ের আঘাতকে মৃত্যুর পর পোকার কামড় বলে উল্লেখ করায়, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ময়নাতদন্ত করার মূল উদ্দেশ্য হলো মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সেটাই বের করতে পারেনি। এ ছাড়া এই মামলার তদন্তের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো, ময়নাতদন্তের কতক্ষণ আগে তনুর মৃত্যু হয়েছে, সেটা জানা। প্রথম প্রতিবেদনে সেটাও আসেনি।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত ২৮ মার্চ পুলিশ কবর থেকে তনুর লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আবেদন করে। আদালতের নির্দেশে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে। কামদা প্রসাদ সাহাকে প্রধান করে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান করুণা রানী কর্মকার ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক মো. ওমর ফারুক।

 অবশ্য ৩০ মার্চ রাতে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তনু যে হত্যার শিকার, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। তখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য এবং পারিপার্শ্বিক আলামত থেকে তিনি এ ধারণা করছিলেন বলে জানান। একই কথা তিনি ওই দিন বিবিসিকেও বলেছিলেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পুনঃময়নাতদন্তে যকৃৎ ও পাকস্থলীর কিছু অংশ পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। আগে এক দফা ময়নাতদন্তে মরদেহের বিভিন্ন অংশ কাটাকাটি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার (গরম ও বৃষ্টি) মধ্যে নয় দিন পর কবর থেকে লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নির্যাতন ও ধর্ষণের আলামতের প্রমাণ পাওয়া কঠিন।
অপর একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, প্রথম ময়নাতদন্তে অভিজ্ঞ কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। যার কারণে দরকারি কিছু বিষয় উপেক্ষিত থেকে গেছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনু গত ২০ মার্চ খুন হন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে পাওয়ার হাউসের অদূরে কালভার্টের পাশে একটি ঝোপ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন একমাত্র মেয়েকে হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।